প্রকাশিত: Sun, Mar 19, 2023 4:29 PM
আপডেট: Thu, Jun 26, 2025 3:11 AM

ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন বিলাল (রা.), দেশের পেশাদার মুয়াজ্জিন এবং দরদী

আবু বকর সিদ্দিক রাজু : গ্রামের মসজিদের আজানের একটা অদ্ভুত সৌন্দর্য আছে। কাঁচা সৌন্দর্য। হৃদয় দিয়ে টের পেতে হয়। হাটবাজার এলাকার মসজিদ বাদ দিলে সাধারণত গ্রামের কোনো মসজিদে পেশাদার ইমাম বা মুয়াজ্জিন থাকে না। আশেপাশের বাড়ির কোনো বয়স্ক বা মধ্যবয়সী মুসুল্লি নিজে দায়িত্ব নিয়ে আজান দেন, নামাজ পড়ান। শুক্রবারে জুমার নামাজ ব্যতিক্রম হতে পারে। এই মুয়াজ্জিন সচারাচর কোনো মাদ্রাসা পড়ুয়া নন। আরবি পড়ার কোনো ব্যাকগ্রাউন্ড নেই। নেই পরিশীলিত কোনো কণ্ঠ বা গলায় মসৃণ স্বরের কাজ। 

কিন্তু আপনি আজানের শব্দে ব্যাখ্যাতীত একটা দরদ অনুভব করবেন। আপনার আসলেই  মনে হবে কেউ ডাকছে, ‘আসো নামাজের দিকে আসো’, ‘আসো কল্যাণের দিকে আসো’। ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন বিলাল (রা.) এর কথা ভাবুন। যখন সিদ্ধান্ত এসেছে এখন থেকে আজানের মাধ্যমে নামাজের আহ্বান করা হবে, প্রতিদিন পাঁচবার, কে দেবে আজান? মক্কা থেকে রাসূলের সঙ্গে হিজরত করা সম্ভ্রান্ত কুরাইশ ও অন্যান্য উচ্চ বংশীয়রা আছেন, মদীনার খ্যাতনামা আনসাররা আছেন। কাকে এই দায়িত্বে সম্মানিত করা হবে? সবার মাঝ থেকে রাসূল (সা.) এই দায়িত্ব দিলেন বিলাল, একজন হাবশী (আফ্রিকান কালো/নিগ্রো) যে এককালে ছিলো ক্রীতদাস তাঁকে। ধরেই নেওয়া যায় যে, তৎকালীন নিখুঁত আরবীয় উচ্চারণের নেটিভ এক্সেন্টে তিনি কথা বলতেন না। 

বিভিন্ন রেফারেন্সেও এমন পাইনি যে বিলাল (রা.) মধুর কণ্ঠের অধিকারী ছিলেন। অথচ প্রথম মুয়াজ্জিনের এই সম্মান একমাত্র বিলালের। আহা, বিলাল (রা.) এর আজানের দরদ কতোটা কল্পনাতীত ছিলো। প্রতিটা সাধারণ মানুষ যে আল্লাহর কাছে মানুষ একই এবং কেবল নিজের পারফরমেন্স (কাজ/ঈমান/আমল) ভিত্তিতে মর্যাদা লাভ করেন বা মর্যাদা হারান সেটার টেক্সটবুক উদাহরণ হজরত বিলাল (রা.)। বড় শহর-বন্দরে-বাজারে চকচকে মসজিদ, আধুনিক সাউন্ড সিস্টেম, এসি, ট্রেইন্ড খতিব, পেশাদার মুয়াজ্জিন, অতি ক্ষমতাধরদের কমিটি সবই আছে। তবে এই দরদটা নেই। থাকলেও এতো বিরল যে খুঁজেই পাওয়া যায় না। ফেসবুক থেকে